হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ লোপাটের ঘটনায় গভর্নর আতিউর রহমানের পদত্যাগের পর ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে বিএনপি।
মঙ্গলবার দুপুরে ইন্সটিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইইবি) প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ দাবি জানান দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আসম হান্নান শাহ।
তিনি বলেন, “এই ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর সাহেব একা দায়ী হবেন কেন? তার ওপরে মন্ত্রী মহোদয় আছেন, তার ওপর সরকার আছে। এটা যদি বিচ্ছিন্ন ঘটনা হতো, তাহলে আমরা তাকে দোষী করতে পারতাম। এর আগে আমরা বেসিক ব্যাংকে দেখেছি- ৪ হাজার কোটি, ৬ হাজার কোটি টাকার লুটপাট দেখেছি।
“সুতরাং দেশের সম্পদ অন্যরা লুটে নিয়ে যাচ্ছে বা সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় লুটে নিয়ে যাচ্ছে, এজন্য অনতিবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ করা উচিৎ।
“এই অর্থ লোপাট ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি দেওয়া উচিত। কেবলমাত্র গভর্নর সাহেবকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে কোনো লাভ হবে না।”
এর আগে সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন গভর্নর আতিউর রহমান।
ফিলিপিন্সের ডেইলি ইনকোয়ারারে ২৯ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮১ মিলিয়ন ডলার লোপাটের খবর এলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে আলোচনার ঝড় ওঠে।
তদন্তে জানা যায়, গত ৪ ফেব্রুয়ারি সুইফট মেসেজিং সিস্টেমে হ্যাংকিংয়ের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে সঞ্চিত বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই অর্থ ফিলিপিন্সের একটি ব্যাংকে সরিয়ে ফেলা হয়।
শ্রীলঙ্কার একটি ব্যাংকে আরও ২০ মিলিয়ন ডলার সরানো হলেও বানান ভুলের কারণে সন্দেহ হওয়ায় শেষ মুহূর্তে তা আটকে যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংক শুরুতেই বিষয়টি টের পেলেও কর্মকর্তারা তা গোপন করে যাওয়ায় অর্থমন্ত্রী আবুল আবদুল মুহিত ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
অর্থ লোপাটের বিষয়টি চেপে গিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেভাবে তা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছে তাকে ‘অযোগ্যতা’ আখ্যায়িত করে ‘ক্ষুব্ধ’ মুহিত রোববার বলেছিলেন, এই ‘স্পর্ধার’ জন্য ‘অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।
হান্নান শাহ বলেন, “এই ঘটনার সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনেকে জড়িত রয়েছে। আমি আজকে বাংলাদেশ ব্যাংকের যারা কর্মকর্তা আছেন, তাদের একটা তালিকা দেখেছি। সেই তালিকটি- সাংবাদিক বন্ধুদের বলব আপনারা চেক করবেন। সে জায়গা বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশ না হলে এমন ঘটনা হতে পারত না।”
‘সরকারও এই ঘটনায় তার দায় এড়াতে পারে না’ বলেও মন্তব্য করেন সাবেক মন্ত্রী হান্নান।
বিএনপির জাতীয় কাউন্সিল প্রস্তুতির ব্যবস্থাপনা, নিরাপত্তা ও সেবা উপ কমিটির আহ্বায়ক আসম হান্নান শাহ সকালে কমিটির সদস্যদের নিয়ে ১৯ মার্চের কাউন্সিলের জন্য বরাদ্দ জায়গা দেখতে যান।
পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
বিডিনিউজ