সোয়েব সাঈদ:
রামুতে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও ধর্মীয় প্রার্থনার মধ্য দিয়ে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা পালিত হয়েছে।
৯ ও ১০ মে দু’দিন ব্যাপী পুণ্যময় এ শুভ দিনটিকে ঘিরে রামুর বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারে ছিলো নারী-পুরুষের সরব উপস্থিতি।
রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহার, ঐতিহাসিক রাংকুট বনাশ্রম মহাতির্থ বৌদ্ধ বিহার, মৈত্রী বিহার, উত্তর মিঠাছড়ি প্রজ্ঞামিত্র বন বিহার, বিমুক্তি বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্র ও ভূবন শান্তি একশ ফুট সিংহ শয্যা গৌতম বুদ্ধমুর্তি, হাজারীকুল বোধিরতœ বৌদ্ধ বিহার, লালচিং, সাদাচিংসহ উপজেলার ৩০ টি বৌদ্ধ বিহারে ছিল বুদ্ধ পূর্ণিমার নানা আয়োজন।
এসব বিহারে পূজা, পিন্ডদান, শীল গ্রহন, ধর্মালোচনা, সমবেত প্রার্থনা ও হাজার প্রদীপ প্রজ্জলনে অংশ নেয় হাজার হাজার পুণ্যার্থী।
ঐতিহাসিক রাংকুট বনাশ্রম মহাতির্থ বৌদ্ধ বিহার বুদ্ধ পুর্নিমার নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মধ্যে মহামতি বুদ্ধের ৮৪ হাজার ধর্মস্কন্ধ পুজা ছিলো অন্যতম।
৯ মে বিকাল থেকে ১০ মে ভোর পর্যন্ত চলে ধর্মস্কন্ধ পুজার আয়োজন। নানান ফলমুল আর ফুলে ফুলে সজ্জিত পুজা ভোরে উৎসর্গ করা হয়। ২৫৬১ বুদ্ধবর্ষকে বরণ উপলক্ষে ৬১ কুলপুত্রকে প্রব্যজ্জ্যা ধর্মে দীক্ষীত করা হয়।
এদিকে রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহারে এ উপলক্ষে ব্যাপক কর্মসূচি পালন করেছে। কর্মসূচির মধ্যে ছিল বুদ্ধ পূজা, শীল গ্রহন, পিন্ডদান, অষ্ট পরিষ্কার দান, প্রদীপ পূজা ও ধর্মসভা।
এছাড়া উপজেলার সকল বৌদ্ধ বিহারে ভোর থেকে স্ব-স্ব গ্রামের বৌদ্ধ উপাসক উপাসিকারা বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বিহারে গিয়ে দান,শীল, ভাবনায় রত থাকেন।
ধর্মসভায় বৌদ্ধ ভিক্ষুরা বলেছেন, বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক মহামতি গৌতম বুদ্ধের জন্ম, বোধিজ্ঞান ও নির্বাণ লাভের স্মৃতি বিজড়িত এই দিনটি বৌদ্ধদের জন্য অত্যন্ত শুভ দিন। বুদ্ধ পূর্ণিমা বৌদ্ধদের সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্মীয় উৎসব। বিশ্ব শান্তির অনুসারি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নিকট বুদ্ধ পূর্ণিমা সম্প্রীতি ও ভালোবাসার স্মারক। বুদ্ধের সাম্য ও মৈত্রীর বাণী বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। তার অহিংসা ও সকল জীবের প্রতি দয়ার আদর্শ মানব কল্যাণের মূল কথা। শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা বৌদ্ধদের সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্মীয় উৎসব। মহামতি বুদ্ধ ছিলেন মানবতাবাদী ব্যক্তিত্ব। তাঁর বাণী হল মহামৈত্রীর। তাঁর অন্তর্নিহিত আবেদন হল- সকল প্রাণীর প্রতি অপরিমেয় মৈত্রী পোষণ করা। হিংসাক্ষুব্ধ বিশ্বে বুদ্ধের মৈত্রীবাণীর মূল্য অপরিসীম।
বুদ্ধ বলেছেন, জগতে শত্রুতা দ্বারা শত্রুতা জয় করা যায় না, শত্রুতাকে মৈত্রী দ্বারা জয় করতে হয়। বুদ্ধ মানুষকে ভালবাসতে বলেছেন।
দু’দিনব্যাপী আয়োজনের সমাপনি অনুষ্ঠানে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল প্রাণীর সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি ও মঙ্গল কামনা করে সমবেত প্রার্থনা করা হয়।