বছর ঘুরে ফিরে এল ২৫ শে মার্চ সেই ভয়াল কালরাত্রি।
আজ রাতে পাকবাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়েছিল এদেশের নিরস্ত্র
এবং ঘুমন্ত মানুষের উপর।
এতক্ষনে কি ভয়ংকর গণহত্যা চলছে তা কি ভাবা যায়!
হত্যা, ধর্ষণ, জ্বালা-পোড়াও, লুটপাট করছে হায়েনার দল।
চারদিকে রক্ত স্রোত আর লাশের স্তুপ।
পূর্ব পাকিস্তানের কোটি কোটি মানুষের মনে স্বাধীনতার স্বপ্নের বীজ
বপন করে দেওয়া অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতাকে গ্রেপ্তার করে
পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হল।
রাজনীতির কবি এমন একটা কিছু হবে তা আগে থেকে বুঝতে
পেরেছিলেন। তাই তো তিনি ৭ মার্চের ভাষণে বলে দিয়েছিলেন
‘আমি যদি হুকুম দিবার নাও পারি, তোমাদের যা কিছু আছে তা দিয়ে
শত্রুর মোকাবেলা করবে। মনে রাখবে, আমাদের এবারের সংগ্রাম
মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা’।
তিনি যদি সেদিন পালিয়ে যেতেন, তাহলে বিশ্ববাসী বলতেন শেখ
মুজিব তাঁর দেশের মানুষকে অরক্ষিত ভাবে রেখে নিজে বাঁচার জন্য পালিয়েছেন।
হয়তো বলতেন শেখ মুজিব বিচ্ছিন্নবাদী নেতা।
কিন্তু মহান এই নেতা বদনাম করার মত সেই সুযোগ কাউকে দেননি।
একইভাবে কি বীরত্বই না দেখালেন নিরস্ত্র এই জাতি। যুদ্ধ করে দেশ এবং দেশের
স্থপতি উভয়কে মুক্ত করলেন। আমরা সেই বীরের জাতি।
অন্যায়ের কাছে মাথা নত করতে আমরা শিখিনি।
স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪৫ বছর হল। এই স্বাধীনতা কারো কাছ থেকে
লাভ করা নয়, সর্বোচ্চ ত্যাগের মাধ্যমে অর্জন করা স্বাধীনতা।
আমরা ৭১’ এর ২৫ শে মার্চের কালোরাত্রি পেরিয়ে এসেছি।
আমরা এখনো ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করি।
আমরা সেই কালোরাত্রির মত আজও এই রাতে জেগে থাকি।
জেগে থাকি নির্যাতিত হবার জন্য নয়, জেগে থাকি প্রথম প্রহরে
স্বাধীনতার জয়ধ্বনি করার জন্য।
আর পাকবাহিনীর কাছে জীবনের প্রতিটি ২৫ শে মার্চ হবে এক
একটা কালোরাত্রি। আমাদের স্বাধীনতা উদযাপনের প্রতিটি জয়ধ্বনি তাদের
বুকে এক একটা মর্টারসেলের মত বিদ্ধ হবে। এটাই তাদের পাপের
দন্ড যা তাদের সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হবে।
২৬ শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আমাদের রামু ডটকম পরিবারের পক্ষ
থেকে সকল শহীদদের প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা।