পাহাড় ধসে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির ঘটনায় সেনাবাহিনীর সহায়তায় অবিলম্বে ত্রাণ, পুনর্বাসন ও সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে পাঠানো এক আদেশে এ তথ্য জানান।
ত্রাণ বিতরণের পাশাপাশি ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট ও অবকাঠামো সংস্কারসহ ১৯টি বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন সরকার প্রধান।
সাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে সোমবার রাত থেকে বুধবার ভোটর পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলায় পাহাড় ধসে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার রাত পর্যন্ত রাঙামাটি, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, কক্সবাজার ও খাগড়াছড়িতে মোট ১৫০ জনের লাশ পেয়েছেন উদ্ধারকর্মীরা।
বুধবার সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে রাঙামাটির ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যান মুখ্য সচিব। সেখানেই ফোনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কথা হয়।
সুইডেন সফরে থাকা প্রধানমন্ত্রী মুখ্য সচিবের কাছে দুর্গত এলাকার খোঁজ খবর নেন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন। পরে রাঙামাটিতে বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাগুলো অবহিত করেন কামাল চৌধুরী।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা:
# চট্টগ্রাম ও অন্যান্য এলাকার সঙ্গে রাঙ্গামাটির যোগাযোগ পুনঃস্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে; খাগড়াছড়ি হয়ে বেইলিব্রিজ নির্মাণের মাধ্যমে বিকল্প ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগে নিতে হবে।
# ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন সংস্কার এবং হাসপাতাল, আশ্রয়কেন্দ্র ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে জেনারেটরের মাধ্যমে বিকল্প বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে হবে।
# আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আসা ক্ষতিগ্রস্তদের নাম নিবন্ধন করে সঠিক পরিসংখ্যান যথাযথভাবে সংরক্ষণ এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে হবে।
# পর্যাপ্ত পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও প্ল্যান্ট সরবরাহ এবং পর্যাপ্ত সংখ্যক মেডিকেল টিম ও প্রয়োজনীয় ওষুধ সামগ্রী ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পাঠাতে হবে।
# ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়ে যেসব ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা বা টাওয়ার রয়েছে তা অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে।
# ভূমিধসের কারণে ঝুঁকিতে থাকা রাঙামাটি সার্কিট হাউজ, পাসপোর্ট অফিসসহ বিভিন্ন ভবন রক্ষা ও সংস্কারের ব্যবস্থা নিতে হবে।
# যেসব উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পদ শূন্য রয়েছে সেখানে পদায়ন ও দ্রুত যোগদান নিশ্চিত করতে হবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে।
# অবকাঠামো পুনর্নিমাণ ও সংস্কার এবং ত্রাণ বিতরণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমসহ প্রয়োজনীয় সব ক্ষেত্রে সহায়তা দেবে সেনাবাহিনী।
পার্বত্য জেলার পাশাপাশি অন্য জেলাগুলোতেও একই রকম পদক্ষেপ নিতে কথা বলা হয়েছে ওই নির্দেশনায়।
সূত্র: বিডিনিউজ।