শহিদুল ইসলাম, উখিয়া।
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার ঐতিহ্যবাহী হলদিয়াপালং ইউনিয়নের অন্যতম কৃষি বান্ধব গ্রামের নাম মৌলভীপাড়া। এ এলাকাটি উখিয়ার প্রাণ কেন্দ্র কোটবাজার ষ্টেশন থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে। সবুজ-শ্যামল, গাছ-গাছালি, সমতল ও উঁচু নিচু পাহাড়ের মেঠোপথে সাজানো এ মৌলভী পাড়া। ঐতিহ্যবাহী কৃষি বান্ধব এ এলাকা এখনো ধরে রেখেছে তাঁর নিজস্বতা।
এলাকার অনেক গুণী মুরব্বীরা বলে থাকেন, “তেল, লবণ ছাড়া কৃষিতে উৎপাদন হয় না এমন কিছুই নেই এখানে”। মৌলভী পাড়ার ৫ হাজার মানুষের জীবিকার প্রধান উৎস পান চাষ। মৌলভী পাড়ার উৎপন্ন পান দেশের চাহিদা মিটিয়ে রফতানি হয় দেশের বাইরে। শুধু পানকেই জীবিকার উৎস করে নেয়নি এ এলাকার সহজ সরল কৃষি প্রেমী মানুষগুলো। নিজস্ব কৃষি জমিতে পান চাষের পাশাপাশি ধান, আলু, টমেটো, বেগুন, মরিচ, পিয়াজ, রসুনসহ সব রকমের সবজি ও মৌসুমী ফলের চাষ।
এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় প্রতিটি বাড়িতে কৃষি চাষের পাশাপাশি গৃহপালিত পশু ও বাড়ির আঙিনায় অন্তত একটি মুরগীর খামার। এলাকার সচেতন মহল উখিয়া-টেকনাফের সাংসদ আবদুর রহমান বদির সুদৃষ্টি ও আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।
তাছাড়া সাংসদের কাছে এলাকাবাসী উখিয়ার ধারাবাহিক উন্নয়নের তালিকায় হলদিয়াপালং ইউনিয়নের অবহেলিত ও বঞ্চিত মৌলভীপাড়া সংস্কারের দাবি জানান।
এ এলাকার বিশিষ্ট পান ব্যবসায়ী নুরুল হাকিম সওদাগর জানান, এ এলাকায় কয়েকটি প্রবাসী পরিবার ছাড়া অন্য সবাই কৃষি নির্ভরশীল। উখিয়া উপজেলার কৃষি অবদানের জন্য অন্যতম মৌলভী পাড়া। মৌলভী পাড়ার সহজ সরল কৃষি প্রেমী মানুষগুলো তাদের শ্রদ্ধেয় পিতার ঐতিহ্য ধরে রাখার পাশাপাশি বাংলাদেশের কৃষিতে একটি বিরাট একটি ভূমিকা রাখতে চায়।
মৌলভী পাড়া এলাকার সম্ভাব্য মেম্বার প্রার্থী শামশুল আলমসহ বেশ কয়েক জন এলাকাবাসীর সাথে জানা গেছে, বর্তমান সরকারের গত ৭ বছরে এ এলাকায় উন্নয়নের কোন ছোঁয়া লাগেনি। অত্র এলাকার মিজানুর রহমান মিজান নামের এক তরুণ এক বুক দুঃখ নিয়ে বলেন, এ এলাকায় কিছুর অভাব নেই। আমরা আমাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্যের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করতে পারি। এ এলাকার কৃষি প্রেমী মানুষের কারো কাছে কিছু চাওয়ার নেই। কারণ, সারাদিন কষ্ট করে আজ উখিয়ার কৃষি উন্নয়নে আমরা যে ভূমিকা রেখেছি তা বর্তমান সরকারের জানা উচিত।
আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে। শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া, যোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি সহ কিছুতেই বাংলাদেশ আজ পিছিয়ে নেই। পৃথিবীর উন্নত দেশের সাথে তাল মিলিয়ে চলছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এমন কোন এলাকা খোঁজে পাওয়া যাবে না আমাদের এলাকা ছাড়া।
আমার এলাকার রাস্তা-ঘাট, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র এলাকা থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দুরে। যার কারণে ছাত্র-ছাত্রী ও রোগীরা চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
আমাদের এলাকার সহজ সরল মানুষ দীর্ঘদিন ধরে আরকান সড়ক হয়ে মৌলভী পাড়ার ৬ কিলোমিটার সড়কের জন্য যে দূর্ভোগ পোহাচ্ছে এ কথা বাঁদই দিলাম, একটি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ও নেই।
এ কারণে ছোট ছোট কোমলমতি দেড় হাজার শিক্ষার্থীর জন্য একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের কথা কিভাবে বাঁধ দিতে পারি।
এ এলাকার ৫ হাজার সহজ সরল মানুষ ও দেড় হাজার ছাত্র-ছাত্রী কি একটি রাস্তা, একটি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, একটি স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রের সেবা পাওয়ার নাগরিক অধিকার রাখে না?
এলাকাবাসী মানুষের স্বাস্থ্য, ছাত্র-ছাত্রী ও তরুণ প্রজন্মের সোনালী ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে খুব শীঘ্রই সাধারণ মানুষ ও ছাত্র-ছাত্রীর অধিকারগুলো প্রতিষ্ঠায় উখিয়া-টেকনাফের সাংসদ আবদুর রহমান বদি এগিয়ে আসবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।