দর্পণ বড়ুয়া:
ভিটামিন এ খাওয়ান, শিশুমৃত্যুর ঝুঁকি কমান এ প্রতিপাদ্য নিয়ে সারা দেশে আগামী ১৬ জুলাই শনিবার পালিত হবে জাতীয় ভিটামিন ‘এ প্লাস’ ক্যাম্পেইন।
ক্যাম্পেইন উপলক্ষে আজ ৩০ জুন, বৃহস্পতিবার রামু হাসপাতাল মিলনায়তনে স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যেগে উপজেলা অবহিতকরণ ও পরিকল্পনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতির ভাষণে রামু উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুল মন্নান বলেন, জাতির ভবিষ্যৎ শিশুদের কথা চিন্তা করে সকলে মিলে ভিটামিন ‘এ প্লাস’ ক্যাম্পেইন সফল করা আমাদের দায়িত্ব। প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিশুরা যাতে বাদ না পরে তার জন্য সকলের দৃষ্টি রাখতে হবে।
তিনি বলেন ভিটামিন এ দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে সহায়তা করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শিশু মৃত্যুর ঝুঁকি কমায়। তিনি আরো বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগের সবচেয়ে বড় সাফল্য টিকাদান কর্মসূচি। কর্মসূচিটি সফল করার লক্ষ্যে ব্যাপকভাবে প্রচার প্রচারনা ও সকলের সার্বিক প্রচেষ্টায় মাতৃমৃত্যু শিশুমৃত্যুহার হ্রাস পেয়েছে ও টিকাদানের হার বৃদ্ধি পেয়েছে।

সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রামু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. পুলক ধর, ডা. সুকান্ত বড়ুয়া, ডা. মিজানুর রহমান, পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জসীম উদ্দিন মোহাম্মদ ইউসুফ, স্বাস্থ্য পরিদর্শক বিপ্লব বড়ুয়া, সাংবাদিক দর্পণ বড়ুয়া, পরিসংখ্যানবিদ পংকজ পাল, ফার্মাসিস্ট সমর শর্মা , ইউনিসেফ পি এইচডির প্রজেক্ট কো অর্ডিনেটর নুর কবির, এমটি ইপি আই আলী আকবর, সূর্যের হাসি ক্লিনিকের ম্যানেজার খন্দকার দেলওয়ার হোসেন প্রমুখ।
সভায় জানানো হয় ক্যাম্পেইনে ৬-৫৯ মাস বয়সী রামু উপজেলার প্রায় ৫৯,৫০০ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে রামু স্বাস্থ্য বিভাগ। এদের মধ্যে ৬-১১ মাস বয়সী ৭৫০০ জন এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী ৫২০০০ হাজার জন শিশুকে এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
উল্লেখ্য, ৬-১১ মাস বয়সী প্রতিটি শিশুকে একটি নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী শিশুদের একটি করে লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে ক্যাম্পেইনে।
সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত রামু উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের ৩৩টি ওয়ার্ডের ২৮১টি টিকাকেন্দ্রে (অস্থায়ী কেন্দ্র ২৬৪, অতিরিক্ত ১১, স্থায়ী ৩, ভ্রাম্যমান ৩টি) কেন্দ্রে এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
তবে চার মাসের মধ্যে কোনো শিশু ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খেয়ে থাকলে তাকে এই ক্যাম্পেইনে আর এ ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না।
ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল মাঠকর্মী বা এনজিও কর্মীদের নিজ হাতে খাওয়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলা হয়, কোনো অবস্থাতেই অভিভাবকদের হাতে ক্যাপসুল দেওয়া যাবে না। কান্নারত অবস্থায় বা জোর করে ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না। ক্যাপসুলটি কাঁচি দিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে কেটে ভেতরের তরলটুকু খাওয়াতে হবে। আস্ত ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না।
সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বেশি ভিড় হয় দেখে কোনো কোনো মাঠকর্মী আগে-ভাগে অনেক ক্যাপসুল কেটে রাখেন, এতে ক্যাপসুলের গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যায়। তাই এটা করা যাবে না।
একইদিনে রামু হাসপাতাল মিলনায়তনে পি এইচডির উদ্যোগে সহায়ক সুপার ভিশনের উপর দিনব্যাপী কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে রামু স্বাস্থ্য বিভাগের স্বাস্থ্য পরিদর্শক এইচ আই, এ এইচ আই ও পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক তথা এফপি আইগণ অংশগ্রহন করেন।
রিসোর্স পার্সন ছিলেন রামু স্বাস্থ্য ও প.প.কর্মকর্তা ডা. আবদুল মন্নান, পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জসীম উদ্দিন মোহাম্মদ ইউসুফ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পি এইচডির প্রজেক্ট কো অর্ডিনেটর নুর কবির। সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন পি এইচডির মাঠ সংগঠক আযম খান।