রামু প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের রামু উপজেলায় জনতার সাথে পুলিশের সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। বৃহষ্পতিবার (৪ আগষ্ট) দুপুর দেড়টার দিকে রামুর জোয়ারিয়ানালা বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে এলাকাজুড়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা গেছে, একদল উশৃংখল জনতা ওই এলাকার হাজ্বী মোশাররফ আলীর ছেলে এরশাদ উল্লাহর পাকা বাড়িটিতে হামলা চালায়। হামলাকারিরা ওই বাড়িটির প্রতিটি কক্ষে থাকা আসবাবপত্র, সীমানা দেয়াল, প্রবেশের পাকা গেইট সহ ব্যাপক মালামাল ও স্থাপনা ভাংচুর চালায়।
খবর পেয়ে রামু থানা পুলিশের এসআই ফারুক ও এসআই খায়ের এর নেতৃত্বে একটি দল ঘটনাস্থলে গেলে সেখানে বিশিষ্ট আওয়ামীলীগ নেত্রী নাজনীন সরওয়ার কাবেরী সহ স্থানীয় কয়েকজনের সাথে বাকবিতন্ডা হয়। এসময় স্থানীয় গুটিকয়েক জনতা পুলিশের উপস্থিতিতে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির চেষ্টা চালালে পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে প্রায় ৬/৭ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এক পর্যায়ে উত্তেজিত জনতা পুলিশ সদস্যদের ধাওয়া করে।
পরে রামু থানার ওসি (তদন্ত) শেখ আশরাফুজ্জামান ঘটনাস্থল জোয়ারিয়ানালা বাজারে এসে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করে এ ঘটনায় কোন পুলিশ সদস্যের দোষ থাকলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেন।
এসময় জেলা আওয়ামীলীগ নেত্রী নাজনীন সরওয়ার কাবেরী, জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান কামাল শামসুদ্দিন আহমেদ প্রিন্স ও জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি কামাল বোরহান উদ্দিন শাহান উপস্থিত ছিলেন।
বসত বাড়িতে হামলাকারি কয়েকজন জানান, গত ২ আগষ্ট জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের মৌলভী পাড়া এলাকায় নুরুল কবির নামের এক যুবককে কুপিয়ে আহত করা হয়। ওই যুবক বর্তমানে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধিন রয়েছেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (৪ আগষ্ট) সকাল ১১ টায় জোয়ারিয়ানালা বাজারে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
ওই মানববন্ধন শেষে একদল উশৃংখল জনতা নুরুল কবিরের উপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত হাজ্বী মোশাররফ আলীর ছেলে এরশাদ উল্লাহর পাকা বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর শুরু করে। বেলা ১২ টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত ভাংচুর চালিয়ে পুরো বাড়ির আসবাবপত্র, দরজা, ফ্রিজ, সীমানা দেয়াল, প্রবেশ গেইট তছনছ করে দেয়।
এ ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে ভাংচুরকারিদের সাথে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এসময় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের জোয়ারিয়ানালা বাজার এলাকা রনক্ষেত্রে পরিনত হয়।
রামু থানার ওসি তদন্ত শেখ আশরাফুজ্জামান আমাদের রামু ডটকমকে জানিয়েছেন, নুরুল কবির নামের যুবককে আহত করার ঘটনায় মামলা হয়েছে এবং আবদুল হাকিম নিকেল নামের একজনকে আটক করে জেলে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে ভাংচুর হওয়া বাড়ির মালিক এরশাদ জানিয়েছেন, কতিপয় ব্যক্তি ফেসবুকে এবং মোবাইলে আহত নুরুল কবির মারা গেছে এমন মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে তার বাড়িতে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি আইনী ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।