বান্দরবান ইউনিয়নের ফাইতং যুব উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিঃ রেজিঃ নং বা/বান ৭১৫ সমিতি খেদারবান স্টেশন অফিস উদ্বোধন করা হয়েছে।
১২ সেপ্টেম্বর, সোমবার সকাল ১০টায় সমিতির অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ ইব্রাহিমের কুরআন তেলওয়াতের মাধ্যমে অফিসে ফিতা কেটে শুভ উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের অতিথি জেলা পরিষদ সদস্য ও লামা উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ফাতেমা পারুল।
এর শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ফাইতং যুব উন্নয়ন সমবায় সমিতির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি ইসমাইলুল করিম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন ফাইতং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ ওমর ফারুক, সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আহবায়ক মো.জালাল উদ্দিন কোম্পানি। সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি, মুহাম্মদ জুবাইরুল ইসলাম (জুবাইর), সাবেক সহসভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য,মো. শহিদুল্লাহ মিন্টু, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহামুদুর রহমান শুক্কুর, ৩টি সমিতি দায়িত্ব প্রাপ্ত ও যুবলীগ নেতা মোহাম্মদ ইয়াছিন, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসাইন জয়, সমাজ সর্দার মো.নুরুল ইসলাম ৪,৫,৬নং ওয়ার্ড মহিলা মেম্বার শাহেদা ইয়াসমিন, সমিতি সাধারণ সম্পাদক মাহ্ফুজুল করিম,অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ ইব্রাহিম, মো. জাকির হোসেন, মো.বুলবুল
এছাড়াও সমিতির সকল সদস্যবৃন্দ, সাংবাদিক ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সমিতির সদস্যবৃন্দ সকল অতিথিবৃন্দকে ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করে নেন। এরপর অতিথিরা বক্তব্য দেন এবং সমিতির সহযোগিতা কামনা করেন।
সমিতির সভাপতি বলেন, আজ আমাদের আমন্ত্রণে সাড়া দেওয়ায় অতিথিদের জানাই সমিতির পক্ষ থেকে অভিনন্দন ও অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনারা জানেন ফাইতং ইউনিয়নে ফাইতং যুব উন্নয়ন সমবায় সমিতি নামে একমাত্র আমরাই যাত্রা শুরু করেছি। গত ১/৬/২১ সালে ২০ জন যুবকদের নিয়ে আমি একটি সমিতি করার উদ্যোগ নেই, এরমধ্যে সকল সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে লামা সমবায় অফিসে যোগাযোগ করি রেজিষ্ট্রেশন করার জন্য, সমবায় অফিসার মহোদয় যে নিয়মকানুন সুপরামর্শ দিয়েছিলেন সেই গুলো মেনে হাটি হাটি পা পা করে সমিতির রেজিষ্ট্রেশন পাই ৩/৩/২০২২ সালে যার রেজিঃ (নং ৭১৫) । সমবায় শক্তি সমবায় মুক্তি, আজকের সঞ্চয় আগামী দিনের ভবিষ্যৎ এই শ্লোগান’কে সামনে রেখে আজ যুব উন্নয়ন সমবায় সমিতির সদস্য ৭৫ জন আমরা।
সমবায় হলো এমন একটি দর্শন যেখানে সমমনা সম্পন্ন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ মেধা, শ্রম, পুঁজি হিসেবে বিনিয়োগ করে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে নিজেদের ভাগ্য উন্নয়নের চেষ্টা করাই হলো যুব উন্নয়ন সমবায়। মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। আর মানুষ কখনও একা থাকতে পারে না। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় ‘‘একলা মানুষ কখনোই পূর্ণ মানুষ হতেপারে না। অনেকের যোগে তবেই সে ষোল আনা পেয়ে থাকে।
‘‘মানুষের এরকম একত্রে থাকা, একত্রে বিভিন্ন প্রতিকুল পরিবেশ মোকাবিলা করা ইত্যাদি বিষয়ে থেকে মানুষ সমবায় বা কো-অপারেটিভ গঠন করে। একই উদ্দেশ্য সমবেতভাবে কাজ করার অর্থ হচ্ছে সমবায়। নিজেদের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের জন্য একই শ্রেণি ও পেশার সঙ্গে সম্পৃক্ত সমমনা কিছু সংখ্যক মানুষ যখন একত্রিত হয়ে কোন সংগঠন বা সংস্থা গঠন করে তখন ঐ সংস্থাকে সমবায় অথবা সমবায় সমিতি বলা হয়ে থাকে। এর মধ্যে একঝাক যুবক দের নিয়ে গঠিত ফাইতং যুব উন্নয়ন সমবায় সমিতি।
মানুষের চারিত্রিক স্বভাব অনেকে মিলে একত্রে বাস করা। একলা মানুষ কখনোই পূর্ণ মানুষ হতে পারে না। দল বেঁধে থাকা, কাজ করা মানুষের ধর্ম বলেই সেই ধর্ম সম্পূর্ণভাবে পালন করাতেই মানুষের কল্যাণ, তার উন্নতি। প্রাচীন সমাজেও সমবায়ী প্রচেষ্টা লক্ষনীয়। সমবায় সংগঠনের সকল সদস্যের সমান অধিকার। এখানে ছোট-বড়, ধনী-দরিদ্র, নারী-পুরুষের পার্থক্য নেই। সমবায়ের সদস্যরা পারস্পরিক সহযোগিতা নিয়ে নিজেদের নিয়ে নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন করার লক্ষ্যে সমিতি গঠন করে। সংগঠনের সকল সদস্যের একসাথে সাহায্যের প্রয়োজন হয় না। কেননা সদস্যরা একে অপরের মঙ্গলের জন্য পারস্পরিক সহযোগিতা বিনিময় করে। সহযোগিতা ভোগি ও সহযোগিতা প্রদানকারী উভয়ই সংগঠনের অভিন্ন অংশ যার ফলে তাদের স্বার্থের সংঘাত থাকে না।
প্রকৃত অর্থে সমবায়ের মূলনীতিই হলো সবার প্রতি সহযোগিতামূলক মনোভাবের সঞ্চার ঘটানো। অর্থের কারণে মানুষ বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত হচ্ছে এবং প্রতিনিয়ত তারা ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য মানুষ যুগে যুগে বিভিন্ন পদ্ধতি আবিষ্কার করেছে, তার মধ্যে একটি অন্যতম এবং বিশ্বের কোটি মানুষের স্বীকৃত মাধ্যমের নাম সমবায়। পরিশ্রমী সংগ্রামী মানুষের আত্মবিশ্বাসের জায়গা সমবায়। শ্রমজীবী উৎপাদনশীল মানুষদের মনে ‘আমরাও পারি’ এই সত্যকে জাগিয়ে তোলে। এইপ্রেক্ষাপটে সমবায় সমিতি একটি সাধারণ প্রতিষ্ঠান নয়। সমবায় সমিতি এমন একটি জনকল্যাণ ও উন্নয়নমূলক আর্থ-সামাজিক প্রতিষ্ঠান যার মধ্যে থাকে গণতন্ত্র,সম্মিলিত কর্মপ্রচেষ্টা, খাদ্য নিরাপত্তা।মানুষের দারিদ্রতা দূর করতে হলে সমবায়ের বিকল্প নেই।
অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য একটি সমবায় সমিতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। একটি সমবায় সমিতিতে যেহেতু সদস্যদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয় জমা করার এবং সমবায় সমিতি ক্ষুদ্র বিনিয়োগ করার সুযোগ রয়েছে সেহেতু সদস্যরা তাদের সঞ্চয়কৃত টাকার নিশ্চয়তা পেয়ে থাকেন। সমবায় সমিতিতে সকল সদস্যের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থাকায় সমিতির পূঁজি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সদস্যদের মতামত থাকে যা অন্যান্য কোন ক্ষেত্রে সম্ভব নয়। সমবায়ের আবেদন ব্যক্তিকেন্দ্রিক নয় বরং সামষ্টিক।
আমি সমিতির কল্যান কামনা করি এবং সবাইকে নিয়ে যেন আমরা সামনে এগিয়ে যেতে পারি এ আশাবাদ ব্যক্ত করি, আমি আশা করবো সিনিয়ররা আমাদের এগিয়ে যাওয়ার সারথি হবেন এবং পরামর্শ দিয়ে পাশে থাকবেন।