কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রফেসর নুরুল হক মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)। রবিবার মধ্যরাত ২টা ৩০মিনিটের সময় কক্সবাজার শহরের নিজ বাসায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি কয়েক বছর ধরে জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো ৬৬ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে, এক মেয়ে, ছয় ভাই, ছয় বোন, আত্মীয় স্বজন সহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
এডভোকেট নুরুল হক রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের অফিসের চর, চরপাড়া নিবাসী মৃত আবদুল সামাদের তৃতীয় ছেলে।
সোমবার (১০ অক্টোবর) সকাল ১০টায় কক্সবাজার সাগরপাড় জামে মসজিদ মাঠে প্রথম নামাজে জানাযা ও দুপুর ২টায় রামু পোষ্ট অফিস মাঠে মরহুমের দ্বিতীয় নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। নামাজে জানাযা শেষে রামুর ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের অফিসের চর, চরপাড়া জামে মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
অফিসের চরস্থ রামু পোষ্ট অফিস মাঠে অনুষ্ঠিত নামাজে জানাযার পূর্বে মরহুমের জন্য দোয়া কামনা করে বক্তৃতা করেন, কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী এডভোকেট ওসমান সরওয়ার আলম শাহিন ও মরহুমের ছোট ভাই জসিম উদ্দিন। নামাজে জানাযায় ইমামতি করেন, চরপাড়া জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আমিনুল ইসলাম। কক্সবাজার শহরে অনুষ্ঠিত নামাজে জানাযা পূর্ব সংক্ষিপ্ত সভায় কক্সবাজার আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট নুরুল ইসলাম সহ জেলার জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা বক্তৃতা করেন। নামাজে জানাযায় শিক্ষক, আইনজীবী, সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি, সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, আত্মীয় স্বজনসহ শোকাহত মানুষরা অংশ নেন।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এডভোকেট নুরুল হক, প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজ ও কক্সবাজার আইন কলেজে দীর্ঘ বছর শিক্ষকতা করেছেন। ১৯৭১এর মহান মুক্তিযুদ্ধের উত্তাল সময়ে তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। ছাত্র জীবন থেকেই তিনি অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ইংরেজি ও আইন দুটো বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। দীর্ঘ ৩৭ বছর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী হিসেবে পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি, তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। তিনি দীর্ঘ ১৪ বছর কক্সবাজার হাশেমিয়া আলিয়া মাদ্রাসায় এবং দীর্ঘ ২০ বছর কক্সবাজার মহিলা কলেজে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। কক্সবাজার মহিলা কলেজে তিনি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন। ওই কলেজের আজীবন দাতা সদস্য মনোনীত হন। ব্যক্তি জীবনে তিনি শিক্ষানুরাগী, সৎ ও আদর্শিক সংগঠক, সহজ সরল উদার মনের মানুষ ছিলেন তিনি।