স্টাফ রিপোর্টার, আমাদের রামু ডটকম :
বাঁকখালী নদীর চর খননের মাধ্যমে নদীর গতিপথ সঠিক করা, শাহসুজা সড়কের রামুর গর্জনিয়া অংশে বাঁকখালী নদীর উপর সেতুর দক্ষিণাংশের এপ্রোচ নির্মাণের পর অচল সেতু সচল করা ও গর্জনিয়া ইউনিয়নের চার ওয়ার্ডের গ্রাম সমূহ বাঁকখালী নদীর ভাঙন থেকে রক্ষার্থে অতি দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের তিন দফা দাবী নিয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছেন গর্জনিয়া ইউনিয়নের সুশীল সমাজের শতাধিক নেতৃবৃন্দ।
রোববার ১০ এপ্রিল দুপুরে এক ঘন্টা যাবত এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে নেতৃত্বদেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তৈয়ব উল্লাহ চৌধুরী ও গণমাধ্যমকর্মী হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী।
এর পর জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসেনকে স্মারক লিপি দেওয়া হয়। এসময় জেলা প্রশাসক বলেন, গর্জনিয়া সেতু রক্ষা করার জন্য পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় তিন কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে টেন্ডারের মাধ্যমে বাঁকখালী নদীর চর খনন করে সেতু রক্ষার কাজ শুরু করা হবে।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, গর্জনিয়া ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান নুরুল আলম, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ইউছুপ মেম্বার, সহ-সভাপতি আহমদ শাহ বাবুল, সাধারণ সম্পাদক শংকর শর্মা, ইউনিয়নের সামাজিক উদ্যোক্তা শাহারীয়ার ওয়াহেদ, উপজেলা যুবলীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক আবছার কামাল, সৌদি প্রবাসি ওমর আলী, গর্জনিয়া ইউপির সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্য আয়েশা খানম চৌধুরী, রওশন আক্তার, নুরুচ্ছাফা বেগম, ইউপি সদস্য কামাল হোসেন, আতাউল্লাহ, মোহাম্মদ জোবাইর, আবু তাহের, আবু ইউছুফ, ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি নাছির উল্লাহ চৌধুরী, সমাজসেবক ছলিম উল্লাহ চৌধুরী, যুবনেতা মহিউদ্দিন, মোহাম্মদ সোহেল, হেডম্যান জয়নাল আবেদীন, গর্জনিয়া উচ্চবিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্য আবু তাহের, রাখাইন নেতা উচিংথোয়াই মার্মা, উক্যমং মার্মা, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহরান চৌধুরী মারুফ, যুবনেতা মোহাম্মদ আজিম, ওসমান, মোহাম্মদ ইদ্রিস প্রমূখ।
স্মারকলিপিতে ইউনিয়নের সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ উল্লেখ করেন যে, গর্জনিয়া কক্সবাজার জেলার অন্যতম শস্য ভান্ডার। জেলার একমাত্র বিদ্যুৎ বিহীন ইউনিয়ন হওয়ার পরও সনাতন পদ্ধতিতেই এ অঞ্চলের কৃষকরা উপজেলা, জেলা তথা বিভাগের খাদ্য শস্য, শাকসবজী, দেশীয় ফলমূলের একটি বিরাট অংশ পূরণ করছে। এই সাফল্যের একমাত্র উৎস বাঁকখালী নদী।
কিন্তু বিগত ২০১২ সালের ভয়াবহ বন্যা, প্রাকৃতিক দূর্যোগ, ২০১৩ সালের ঘন ঘন বন্যা ও পরিবেশ বিপর্যয়ের ফলে অত্র ইউনিয়নের মানুষ এক দূর্বিসহ জীবন যাপন করছে। থমকে পড়েছে অত্র ইউনিয়নের জনসাধারণের জীবন যাত্রা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের মান। এরই মধ্যে নদীর বুক ভরে গিয়ে ইউনিয়নের ৬,৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডের নদীর তীরবর্তী গ্রাম ও সড়ক গুলো বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ভিটে মাটি হারাচ্ছে হাজার হাজার পরিবার। অত্র ইউনিয়নের খেটে খাওয়া সাধারণ জনগণের উপর সব চেয়ে বড় আঘাতটি আসে যখন শাহ সুজা সড়ক (সড়ক নং জেড-১১৩০,জেলা সড়ক উন্নয়ন চট্টগ্রাম জোন) এর গর্জনিয়া অংশে বাঁকখালী নদীর উপর সেতুর দক্ষিণাংশের এপ্রোচ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। দক্ষিণাংশের এপ্রোচ বিলীন হওয়ায় বিগত ২০১৫ সালের জুন মাসে নদী পারাপারের সময় শিশু, বিদ্যালয়গামী ছাত্র-ছাত্রী সহ ৪ (চার) জনের অকাল মৃত্যু হয়।
এর পর থেকে বিভিন্ন গণ মাধ্যমে ফলাও ভাবে এ সমস্যা নিয়ে বহু সংবাদ প্রকাশিত হলেও এ বিষয়ে কোন কার্যকরী পদক্ষেপ আজ অবধি দেখা যায়নি। আমরা গর্জনিয়ার বিভিন্ন সচেতন মহল তাই একত্রিত হয়ে জনগণের এ দূর্বিসহ বিভিষীকাময় জীবনের অন্তহীন সমস্যা সমাধানে একত্রিত হয়েছি। কারণ বর্ষার আগমন আবারও আমাদের এলাকাবাসীকে ভীতসন্ত্রস্ত করে তুলছে, গণমানুষের মাঝে চিন্তা এবার কার প্রাণ কেড়ে নেবে বাঁকখালী। জানিনা কার বুক খালী হবে এবার।
আগামী মে মাসের মধ্যে জনস্বার্থে উল্লেখিত সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবী জানানো হয়েছে স্মারকলিপিতে।