খালেদ শহীদঃ
রামু উপজেলায় ব্যাপক আনন্দ-আয়োজনের মধ্য দিয়ে বুধবার উদযাপিত হচ্ছে ২০ তম চৈত্রমেলা ও নববর্ষ বরণ উৎসব।
আবহমান বাংলার ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক চেতনাকে বাঙ্গালীর মনে চির জাগরুক রাখার মানসে গত ১৯ বছর ধরে রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহার মাঠে চৈত্রমেলা ও নববর্ষ বরণ উৎসব উদযাপন করা হচ্ছে।
এ আয়োজনের মূল উদ্যোক্তা রামু উপজেলার ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রাজনীতিক পলক বড়ুয়া আপ্পু।
শুরুতে রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের মেরংলোয়া গ্রামের বড়ুয়া পাড়ার বাসিন্দাদের অংশগ্রহণে রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহার মাঠে চৈত্রমেলা ও নববর্ষ বরণ উদযাপনের আয়োজন করতেন সামাজিক ব্যক্তিত্ব পলক বড়ুয়া আপ্পু।
বিগত কয়েক বছর ধরে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সকল সম্প্রদায়ের মানুষের অংশগ্রহণে নানা আনুষ্ঠানিকতায় অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে চৈত্রমেলা ও নববর্ষ বরণ উৎসব। আগামী বুধবার এ আয়োজনের ২০ বছর পূর্ণ হচ্ছে।
এ আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বলে সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন, কক্সবাজার সদর-রামু আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য আলহাজ¦ সাইমুম সরওয়ার কমল।
২০ তম চৈত্রমেলা ও নববর্ষ বরণ ১৪২৩ বাংলা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ইউপি সদস্য অরুপ বড়ুয়া কালু আমাদের রামু ডটকম কে জানান, রামুর মেরংলোয়া গ্রামবাসীর প্রাণের উৎসব চৈত্রমেলা ও নববর্ষ বরণ। এ আয়োজনের প্রধান উদ্যোক্তা পলক বড়ুয়া আপ্পু। তাঁর নিরলস প্রচেষ্টায় চৈত্রমেলা ও নববর্ষ বরণ রামুর সম্প্রীতির মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।
২০তম এ আয়োজনে পলক বড়ুয়া আপ্পু সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর সাথে প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে কাজ করছেন মোহাম্মদ হোসেন সানী।
আয়োজক নেতৃবৃন্দ জানান, ২০ তম চৈত্রমেলা ও নববর্ষ বরণ উদযাপন অনুষ্ঠানের মূলপর্ব অনুষ্ঠিত হবে ১৩ এপ্রিল বুধবার রাতে। মূল অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত হবেন, রামু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগ সভাপতি রিয়াজ উল আলম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেলিনা কাজী, সহকারী কমিশনার ভূমি মো. মাহাবুব উল করিম, রামু থানা অফিসার ইনচার্জ প্রভাষ চন্দ্র ধর, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক এড. নুরুল ইসলাম, বৌদ্ধ কল্যাণ ট্রাষ্টের ভাইস চেয়ারম্যান সুপ্ত ভূষন বড়ুয়া, রামু উপজেলা পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মুসরাত জাহান মুন্নী, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা, রামু কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ ঐক্য ও কল্যাণ পরিষদের সভাপতি প্রবীর বড়ুয়া, রামু উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সুবীর বড়ুয়া বুলু, রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহারের সাধারণ সম্পাদক তরুন বড়ুয়া, রামু সোনালী অতীত ফুটবল ক্লাবের সভাপতি ছিদ্দিক আহমদ, শিক্ষানুরাগী ও সমাজসেবক গিয়াস উদ্দিন কোম্পানী।
এ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখবেন, বিশিষ্ট ছড়াকার ও সাংবাদিক দর্পণ বড়ুয়া। বক্তব্য রাখবেন, রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহারের যুগ্ম-সম্পাদক অলক বড়ুয়া, রামু ব্রাদার্স ইউনিয়নের সভাপতি মো. নবু আলম, রামু উপজেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক নীতিশ বড়ুয়া, রামু উপজেলা স্বেচ্ছা সেবকলীগ সাধারণ সম্পাদক তপন মল্লিক ও রামু প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক সুনীল বড়ুয়া প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ আরো জানান, বুধবার দুপুর ২টায় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উদ্বোধনের মাধ্যমে রামুতে ২০ তম চৈত্রমেলা ও নববর্ষ বরণ উদযাপনে আনুষ্ঠানিকতা শুরু করা হবে। উদ্বোধন করবেন, ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম।
উদ্বোধনের পর সাবেক ফুটবলার সুকুমার বড়ুয়া বুলু, শিপন বড়ুয়া ও বিপুল বড়ুয়া আব্বু’র পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হবে লুডু গাছ ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা।
সন্ধ্যায় শাক্যমিত্র বড়ুয়া, পুলক বড়ুয়া ও লিটন বড়ুয়ার উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত হবে শিশু শিল্পীদের অনুষ্ঠান ‘আনন্দ উৎসব’।
রাতে বাংলা সংস্কৃতি নিয়ে আলোচনা সভা ও ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘আনন্দ মেলা হাউজফুল’। এ পর্বে উপস্থাপনায় থাকবেন ২০ তম চৈত্রমেলা ও নববর্ষ বরণ উদযাপনের প্রাণপুরুষ রাজনীতিক পলক বড়ুয়া আপ্পু।
সূধীজনরা জানিয়েছেন, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রাজনীতিক পলক বড়ুয়া আপ্পু রামুর সম্প্রীতিবদ্ধ মানুষের মনোনিত চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নিবার্চনে ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন থেকে প্রতিদ্বন্দিতা করবেন। তিনি আওয়ামীলীগ দলীয় নৌকা প্রতীক পেয়ে নির্বাচন করতে চান।
২০ তম চৈত্রমেলা ও নববর্ষ বরণ ১৪২৩ বাংলা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পলক বড়ুয়া আপ্পু জানান, রামুর সম্প্রীতিবদ্ধ মানুষের প্রাণের এ মেলা প্রয়াত সংগীত ব্যক্তিত্ব বিনয় বড়ুয়া, রায়মোহন বড়ুয়া, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সমীর বড়ুয়া, সব্যসাচী লেখক কবি আশীষ কুমার, সাবেক ফুটবলার ও সাংবাদিক আবীর বড়ুয়া, সাংস্কৃতিক কর্মী হীরক বড়ুয়া নাংকু’র নামে উৎর্সগ করা হয়েছে।
তিনি রামু উপজেলা প্রশাসন, রামু থানা পুলিশ, রামু প্রেসক্লাব সহ উৎসব আয়োজন প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে যাদের সার্বিক সহযোগিতা পেয়েছেন তাদের প্রতি কৃজ্ঞতা জানান।
দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার জন্য অনুষ্ঠান স্থগিত থাকতে পারে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, একটি বছরের বিদায়ে স্মৃতি রোমন্থন ও নতুন বছরের নব চেতনায় রামুর সকল মানুষ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে আবদ্ধ থাকবেন চিরকাল।
একই সাথে মাতৃভাষা বাংলার চিরায়ত সংস্কৃতি-ঐতিহ্য রক্ষায় এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান এবং রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহার মাঠে অনুষ্ঠিতব্য ২০ তম চৈত্রমেলা ও নববর্ষ বরণ ১৪২৩ বাংলা উদযাপন অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার অনুরোধ জানান তিনি।